Top News

ইস্তানবুলের মিরাকল: চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় ফাইনাল

 

২৫ মে ২০০৫, তুরস্কের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় UEFA চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও নাটকীয় ফাইনাল। মুখোমুখি হয়েছিল ইউরোপীয় ফুটবলের দুই শক্তিশালী ক্লাব— এসি মিলান এবং লিভারপুল। ফুটবলপ্রেমীরা আজও এই ম্যাচকে মনে রাখেন "ইস্তানবুল মিরাকল" হিসেবে


প্রথমার্ধ: মিলানের দাপট

ম্যাচ শুরুর মাত্র ৫০ সেকেন্ডের মাথায় এসি মিলানের কিংবদন্তি পাওলো মালদিনি গোল করে দলকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি চলে যায় মিলানের হাতে। হাফটাইমের আগেই হার্নান ক্রেসপো আরও দুটি গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন। লিভারপুল সমর্থকদের জন্য এটি ছিল দুঃস্বপ্নের মতো।


দ্বিতীয়ার্ধ: ছয় মিনিটের জাদু

লিভারপুল কোচ রাফা বেনিতেজ দ্বিতীয়ার্ধে দলকে পূর্ণরূপে পাল্টে দেন। শুরু হয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা কামব্যাক:
*৫৪ মিনিট: স্টিভেন জেরার্ড হেড দিয়ে গোল করেন – ৩-১
*৫৬ মিনিট: ভ্লাদিমির স্মিচার দূর থেকে শট নিয়ে দ্বিতীয় গোল করেন – ৩-২
*৬০ মিনিট: জাবি আলোনসো পেনাল্টি নেন, প্রথম শট ঠেকানো হলেও রিপাউন্ডে গোল – ৩-৩
মাত্র ৬ মিনিটে তিন গোল করে লিভারপুল ম্যাচে ফেরে এবং বিশ্ব জুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের চোখ ছলছল করে ওঠে।


অতিরিক্ত সময় ও ডুডেকের জাদু

অতিরিক্ত সময়ে এসি মিলান বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও লিভারপুল গোলকিপার জারসি ডুডেক দুর্দান্ত সেভ করে ম্যাচে লিভারপুলকে টিকিয়ে রাখেন। বিশেষ করে আন্দ্রি শেভচেঙ্কোর গোলমুখী শট যেভাবে ঠেকান, তা এক কথায় কিংবদন্তির কাজ।


টাইব্রেকার: শেষ হাসি লিভারপুলের

পেনাল্টি শুটআউটে লিভারপুল ৩-২ ব্যবধানে জয়লাভ করে।
*ডুডেক দুটি শট ঠেকান, একটি গোলপোস্টে লাগে।
*চূড়ান্ত শটটি আন্দ্রি শেভচেঙ্কোর ছিল, যেটি ডুডেক ঠেকিয়ে দেন এবং লিভারপুল পঞ্চম উইসিএল শিরোপা জয় করে।


ইতিহাসে স্থান

এই ম্যাচকে আজও অনেকে ''The Miracle of Istanbul'' নামে অভিহিত করেন।

২০০৫ সালের ইস্তানবুল ফাইনাল শুধুমাত্র একটি ম্যাচ ছিল না; এটি ছিল আত্মবিশ্বাস, লড়াই, নেতৃত্ব এবং ভাগ্যের এক অপরূপ উদাহরণ। স্টিভেন জেরার্ডের নেতৃত্বে লিভারপুল যেভাবে ফিরে এসেছিল, তা ফুটবল ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এমন ম্যাচ দ্বিতীয়টি আর কখনো হয়নি।

Post a Comment

Previous Post Next Post